নিউমোনিয়া কি

নিউমোনিয়া কি


নিউমোনিয়া কি,নিউমোনিয়া কাকে বলে,নিউমোনিয়ার লক্ষণ,নিউমোনিয়ার চিহ্ন,কী ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে,প্রতিরোধ করা কি যায় ও নিউমোনিয়ার ঘরোয়া সমাধান



নিউমোনিয়া কি
নিউমোনিয়া কি

নিউমোনিয়া রোগের চিকিৎসা সাধারণত নির্ভর করে কী ধরনের নিউমোনিয়া রোগীকে আক্রমণ করছে তার ওপর। তাই ওপরের লক্ষণগুলো দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়া, ফাঙ্গাশ যে কারণে হোক তদানুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে।



নিউমোনিয়া কাকে বলে?

  ফুসফুসের প্রদাহকে নিউমোনিয়া বলে।

নিউমোনিয়ার কারণ : ব্যাকটেরিয়া জনিত যেমন  নিউমোক্কাস,স্ট্যাফাইলোক্কাস প্রভৃতি




নিউমোনিয়ার লক্ষণ?

.এই রোগের লক্ষণ হঠাৎ কাপুনি দিয়ে জ্বর আসে।

.কাশি হবে ,কাশির সাথে কফ যাবে।

.প্রথম পর্যায়ে কাশিতে কষ্ট হবে  কিন্তু পরবর্তীকালে কষ্ট ছাড়া কাশির সাথে কফ যাবে। 

.বুকে ব্যথা হবে।

.রোগীর চেহারা নীলাভ হয় এবং শ্বাস প্রশ্বাস ঘন ঘন হয়।

.বাচ্চাদের ক্ষেত্রে বমি এবং খিঁচুনি হয় ক্ষুধা মন্দা ও মাথা ব্যথা হবে।




নিউমোনিয়ার চিহ্ন?

তাপমাত্রা বেশি থাকবে। পালস দ্রুত হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির বুকের উঠানামা কম থাকবে। শ্বাসের গতি কমপক্ষে প্রতিমিনিটে ৪০ হবে।


অনুসন্ধান:X-ray chest,sputum for AFB,Blood R/E(Neutrophilic Leukocytosis)..




কী ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে?

* রক্তপ্রবাহে জীবাণুর সংক্রমণ

* ফুসফুসের চারপাশে তরল জমা ও সংক্রমণ

* ফুসফুসে ঘা হয়ে ক্ষত হতে পারে

* তীব্র শ্বাসকষ্ট




প্রতিরোধ করা কি যায়?

হ্যাঁ, নিউমোনিয়া প্রতিরোধযোগ্য রোগ। সচেতন হলে সহজেই প্রতিরোধ করা যায়।


* নিতে হবে নিউমোনিয়াসহ অন্য রোগেরও ভ্যাকসিন। বিশেষ করে ৫ বছরের নিচে বা ৬৫ বছরের ওপরে বয়সীদের অথবা যাঁদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম।


* নিয়মিত হাত ধুতে হবে। যেমন: নাক পরিষ্কারের পর, বাথরুমে যাওয়ার পর, খাবার আগে ও পরে।


* ধূমপান বন্ধ করতে হবে। কারণ, ধূমপান ফুসফুসের রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা ধ্বংস করে দেয়। ফলে সহজেই সংক্রমণ ঘটতে পারে এবং নিউমোনিয়া হতে পারে। ধূমপায়ীদের নিউমোনিয়া সহজেই জটিল আকার ধারণ করতে পারে।


* সাধারণ ঠান্ডা লাগলেও খেয়াল রাখতে হবে যেন এটি খারাপ দিকে না যায়। স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে, পরিমিত বিশ্রাম নিতে হবে, নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করে। শিশু জন্মের পর ইপিআই শিডিউলের ভ্যাকসিনগুলো নিশ্চিত করতে হবে।


* শিশুকে চুলার ধোঁয়া, মশার কয়েল ও সিগারেটের ধোঁয়া থেকে দূরে রাখাও জরুরি।




নিউমোনিয়ার ঘরোয়া সমাধান?

যুক্তরাষ্ট্রের ফুসফুস সংস্থার মতে, ফুসফুসে প্রদাহের উল্লেখযোগ্য লক্ষণ হচ্ছে: কাশি, উচ্চ জ্বর-ঘাম নিঃসরণ-কম্পন সৃষ্টিকারী ঠান্ডা অনুভূতি, শ্বাসকষ্ট, দ্রুত ও অগভীর শ্বাসক্রিয়া, তীব্র বা খোঁচানো বুক ব্যথা যা গভীর শ্বাস নিলে বা কাশলে আরো বেড়ে যায়, ক্ষুধামান্দ্য-শক্তির ঘাটতি-ক্লান্তি, শিশুদের বমিভাব ও বমি এবং বয়স্কদের বিভ্রান্তি। এখানে সাধারণ নিউমোনিয়ার ঘরোয়া সমাধান দেয়া হলো।


পানি, চা ও স্যূপ: সুস্থ থাকলেও শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে একজন মানুষের প্রচুর তরল জাতীয় খাবার খেতে হয়। কিন্তু অসুস্থ অবস্থায় এর গুরুত্ব বহুগুণে বেড়ে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, তরল জাতীয় খাবার ফুসফুসের শ্লেষ্মা বের করে দিতে সাহায্য করে। এ সময় পানি, উষ্ণ চা ও মুরগির স্যূপ ভালো অপশন হতে পারে। ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল থেকে বিরত থাকুন। এগুলো শরীরকে ডিহাইড্রেটেড করতে পারে।


লেবু ও মধু: কাশি আসলে লোকজনের প্রবণতা হচ্ছে কাশির সিরাপ সেবন করা। কিন্তু এটা মনে রাখতে হবে যে, কাশি হলো এমন একটা প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে শরীর ফুসফুসের শ্লেষ্মা বের করে দিতে চেষ্টা করে। তাই কাশির সিরাপ ছাড়াই চলতে পারলে ভালো। কিন্তু কাশির মাত্রা বেশি থাকলে হালকা ডোজে সিডাটিভ কাশির সিরাপ সেবন করতে পারেন অথবা লেবু ও মধুর মিশ্রণ পান করতে পারেন।


ব্যথার ওষুধ: ব্যথা ও জ্বরে ভুগলে আইবুপ্রোফেন ও প্যারাসিটামলের মতো ব্যথানাশক ওষুধ সহায়ক হতে পারে। কখন কতটুকু সেবন করতে হবে নিশ্চিত হয়ে নিন। চিকিৎসকে কোনো অ্যান্টিবায়োটিক দিলে তা কোর্স শেষ না হওয়া পর্যন্ত চালিয়ে যেতে হবে, এমনকি ভালো অনুভব করলেও। অন্যথায় নিউমোনিয়া ফিরে আসতে পারে।


গরম ভাপ: শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হলে গরম ভাপে আরাম পেতে পারেন। কুসুম গরম পানিতে একটি কাপড় ভিজিয়ে কপাল বা ঘাড়ের ওপর ২০-৩০ মিনিট রেখে দিন। এটি বাইর থেকে শরীরকে শীতল করবে।

 

এই রোগের চিকিৎসা সাধারণত নির্ভর করে কী ধরনের নিউমোনিয়া রোগীকে আক্রমণ করছে তার ওপর। তাই ওপরের লক্ষণগুলো দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url