ক্রেডিট কার্ড কী
ক্রেডিট কার্ড কী
ক্রেডিট কার্ড কী,ক্রেডিট কার্ড কিভাবে পাবো,ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা,আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড কি,ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা,ক্রেডিট কার্ড এর কিছু সম্ভাব্য অসুবিধা হলোঃ
ক্রেডিট কার্ড কী |
আধুনিক বিশ্বে ক্রেডিট কার্ডকে বলা হয় প্লাস্টিক মানি এর আরেক নাম পেমেন্ট কার্ড। এর বৈশিষ্ট্য হলো হাতে নগদ টাকা না থাকলেও এই কার্ড দিয়ে কেনাকাটা করা যায়। ক্রেডিট কার্ড বলতে আমরা বুঝি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের জারি করা এটিএম কার্ড যাতে নির্দিষ্ট শর্ত সাপেক্ষে নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ একজন ব্যক্তিকে ধার দেওয়া হয়। এবং সহজভাবে, ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীরা তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি ঋণ নেয় এবং ব্যবসা বা অন্য কোন প্রয়োজনে ব্যয় করে, এই শর্ত সাপেক্ষে যে ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ সুদ নেয়। এক কথায় একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ পর্যন্ত অর্থ ব্যবহার বা খরচ করা বা উত্তোলন করতে পারেন একজন গ্রাহক তার ক্রেডিট কার্ড দিয়ে। ক্রেডিট কার্ডগুলি সাধারণত এমন পণ্য বা পরিষেবা কেনার সময় ব্যবহার করা হয়।
ক্রেডিট কার্ড কি, ক্রেডিট কার্ড কাকে বলে, ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা, ক্রেডিট কার্ডের ঋণ, ক্রেডিট কার্ড কী, ক্রেডিট কার্ড সুবিধা, ক্রেডিট কার্ড এর সুবিধা, ক্রেডিট কার্ড এর কাজ কি, ক্রেডিট কার্ড কত প্রকার, ক্রেডিট কার্ড প্রকল্প, ক্রেডিট কার্ড বলতে কি বুঝায়, ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের সুবিধা, ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা, বিভিন্ন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সমূহ, ক্রেডিট কার্ড কত প্রকার কি কি।
ক্রেডিট কার্ড কী?
ক্রেডিট কার্ড হল ডেবিট কার্ডের মতই পকেট সাইজের একটি (সাধারণত) প্লাস্টিকের কার্ড। বর্তমানে ব্যাংক এবং অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি চিপ-ভিত্তিক ক্রেডিট কার্ড প্রদান করে। ক্রেডিট কার্ডধারীর নাম, ক্রেডিট কার্ড নম্বর এবং মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ ক্রেডিট কার্ড এর সম্মুখে দেয়া থাকে। সিভিভি, ক্রেডিট কার্ডধারীর স্বাক্ষর এবং কাস্টমার কেয়ার কেন্দ্রের বিবরণ (সাধারণত) অন্যদিকে দেয়া থাকে।
ক্রেডিট কার্ড কিভাবে পাবো?
ক্রেডিট কার্ড পেতে হলে প্রথমে ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতায় উল্লেখ্য প্রয়োজনীয় ব্যাপারগুলো নিশ্চিত করুন। ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা থাকলে খুব সহজেই ক্রেডিট কার্ড এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।
ব্যাংক বা আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান (যেমন লংকাবাংলা ফাইন্যান্স) থেকে ক্রেডিট কার্ড পেতে হলে তাদের ক্রেডিট কার্ড বিভাগের প্রতিনিধির সাথে যোগাযোগ করতে হবে। এরপর আপনার আয়ের উৎস, মাসিক আয়, ইত্যাদি তথ্য জমা দেওয়ার পর ক্রেডিট কার্ড বিভাগ থেকে আপনাকে পরবর্তী ধাপ সম্পর্কে অবহিত করা হবে।
ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা?
কারা ক্রেডিট কার্ড নিতে পারবেন – এট ব্যাপারটি নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন। ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা বাংলাদেশ এর হিসেবে অনেকটাই সাধারণ।
চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী বা অন্য পেশাজীবী, যাদের আয় ও বৈধ কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) আছে, শুধুমাত্র তারাই ক্রেডিট কার্ড এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। অর্থাৎ ক্রেডিট কার্ড পাওয়া যোগ্যতা হলোঃ
জাতীয় পরিচয় পত্র।
টিআইএন সার্টিফিকেট।
চাকরিজীবির ক্ষেত্রে অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার বা স্যালারি সার্টিফিকেট এবং ৩ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে ট্রেড লাইসেন্স, Memorandum of Association ৩ মাসের ব্যাংক ট্রানজেকশন স্টেটমেন্ট।
এছাড়া কোনো ব্যাংকে আপনার ফিক্সড ডিপোজিট থাকলে তারা যদি রাজী হয় তাহলে আপনি সেই ব্যাংকে ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারেন। আপনার ক্রেডিট কার্ডের ক্রেডিট লিমিট কত হবে তা আপনার তথ্য বিশ্লেষণ করে ব্যাংক বা কার্ড সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান সিদ্ধান্ত নেবে।
আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড কি?
আপনার ব্যাংক থেকে ইস্যু করা সিঙ্গেল কারেন্সি ক্রেডিট কার্ড দেশের মধ্যে কাজ করলেও দেশের বাইরে কাজ করবেনা। এজন্য আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড এর প্রয়োজন পড়ে। এগুলো সাধারণত ডুয়াল কারেন্সি ক্রেডিট কার্ড হয়ে থাকে। এতে কারেন্সি হিসেবে বাংলাদেশি টাকা এবং মার্কিন ডলার থাকে (মোট দুটি কারেন্সি বা মুদ্রা)। তবে ব্যাংকভেদে আপনি হয়তো ইউরো বা অন্যান্য মুদ্রাও কারেন্সি হিসেবে নিতে পারেন।
আপনি সাধারণ ক্রেডিট কার্ডের আবেদন করার সময় সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বা কার্ড সেবাদাতা প্রতিনিধিকে জানালেই তারা আন্তর্জাতিক কার্ড এর আবেদন পত্র দিবেন। তবে বিদেশী মুদ্রা যেমন ডলার খরচ করতে চাইলে আগে আপনার পাসপোর্টের মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ডে নির্দিষ্ট পরিমাণ ডলার এন্ডোর্স করাতে হবে।
আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড বা ইন্টারন্যাশনাল ক্রেডিট কার্ড বিশ্বের প্রায় সকল দেশেই গ্রহণযোগ্য। ইন্টারন্যাশনাল ক্রেডিট কার্ড আপনার দেশের বাইরে ভ্রমণের ক্ষেত্রে করা খরচের উপায়কে আরো সহজ করে দেয়।
ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা?
ক্রেডিট কার্ড এর অসংখ্য সুবিধা রয়েছে। ক্রেডিট কার্ড এর কিছু উল্লেখযোগ্য সুবিধা হলোঃ
তৎক্ষণাৎ দামি কিছু কেনার ক্ষেত্রে টাকার জন্য কারো দ্বারস্থ হতে হয়না।
ডেবিট কার্ড বা চেক ব্যবহারের চেয়ে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার অধিক নিরাপদ। কারণ পেমেন্ট গেটওয়ে বা মার্চেন্টের সেবায় কোনো অসামঞ্জস্যতা ধরা পড়লে ক্রেডিট কার্ডে সহজেই রিফান্ড রিকোয়েস্ট করা যায়।
ক্রেডিট কার্ড এর ক্ষেত্রে অনেক কম সুদেই, অনেকসময় শূন্য শতাংশ সুদেও ঝণ পাওয়া যায়।
ক্রেডিট কার্ড এ ব্যয়ের ক্ষেত্রে বিভিন্ন অফার এর মাধ্যমে ব্যয় থেকেই আয় করা সম্ভব।
কার্ড ব্যবহারের ঝণের বোঝা বেশি মনে হলে থাকছে কার্ড এর ধরন পরিবর্তনের সুযোগ।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে কেনাকাটা ও সময়মত বিল প্রদান করলে ক্রেডিট কার্ড হোল্ডারের ব্যাংক থেকে ঝণ পাওয়ার যোগ্যতার সূচক সংখ্যা বা CIB রেকর্ড বাড়ানোর ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে কেনাকাটা করলে অনেক ক্ষেত্রে রিওয়ার্ড পয়েন্টও পাওয়া যায়।
ক্রেডিট কার্ড এর কিছু সম্ভাব্য অসুবিধা হলোঃ
কেনাকাটার পথ সুগম হওয়ায় অহেতুক অর্থ ব্যয়ের প্রবণতা বাড়তে পারে, যার ফলাফল হতে পারে অযথা আর্থিক অস্থিতিশীলতা।
ক্রেডিট কার্ড এ বিল যথা সময়ে পরিশোধে ব্যর্থ হলে বড় অংকের সুদ গুনতে হতে পারে।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করুন বা না করুন, ক্রেডিট কার্ড এর জন্য প্রযোজ্য বার্ষিক ফি প্রদান করা বাধ্যতামূলক।
ক্রেডিট কার্ড হচ্ছে পোস্ট-পেইড। এটা হল ব্যাংক থেকে কার্ডের মাধ্যমে লোন নেয়া, যার অর্থ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফেরত না দিলে সুদ এবং এমনকি জরিমানা সহ ফেরত দিতে হয়। অন্যথায় আইনী ব্যবস্থার সম্মুখীন হতে হয়।