২৫ জন নবীর নাম ও সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

               

                  ২৫ জন নবীর নাম ও সংক্ষিপ্ত পরিচিতি


২৫ জন নবীর নাম ও সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
২৫ জন নবীর নাম ও সংক্ষিপ্ত পরিচিতি


পবিত্র কোরআনে ২৫ জন নবীর নাম উল্লেখ রয়েছে। তাদের কারও কারও আলোচনা বিভিন্ন সূরায় একাধিক জায়গায় স্থান পেয়েছে। আবার কারও কারও নামে সূরার নামকরণ করা হয়েছে। বর্ণিত ২৫ জন নবীর নাম ও সংক্ষিপ্ত পরিচিতি তুলে ধরা হলো....


>আদম (আ.)। মোট ৯টি সূরার ২৫ জায়গায় তার নাম উল্লেখ রয়েছে। তিনি সর্বপ্রথম মানুষ ও নবী ছিলেন।

 

২> ইদরিস (আ.)। কোরআনের দুটি সুরায় দু-বার উল্লেখ হয়েছে তার নাম। তিনি সর্বপ্রথম কলমের সাহায্যে লিখেছেন। আল্লাহ তায়ালা তাকে সিদ্দিক হিসেবে কোরআনে আখ্যা দিয়েছেন এবং তিনি সর্বপ্রথম কাপড় সেলাই করে পরিধান করা শুরু করেন।

 

৩> নুহ (আ.)। ২৮টি সূরায় ৪৩ বার উল্লেখ করা হয়েছে এই নবীর নাম। তিনি নিজ জাতিকে সাড়ে ৯০০ বছর দাওয়াত দিয়েছেন। তার ছেলে কেনানকে কুফরির কারণে আল্লাহ তায়ালা মহাপ্লাবনে ডুবিয়ে মেরেছিলেন।

 

৪> হুদ (আ.) এর নাম তিনটি সূরায় সাতবার উল্লেখ হয়েছে। তাকে আদ জাতির কাছে প্রেরণ করা হয়েছিল। নুহ (আ.) এর সম্প্রদায়কে প্লাবন দিয়ে ধ্বংস করার পর সর্বপ্রথম তার সম্প্রদায়ের লোকেরা মূর্তিপূজায় লিপ্ত হয় এবং আল্লাহ তাদের প্রচ- ঝড় দ্বারা ধ্বংস করে দেন।


 ৫> সালেহ (আ.) এর নাম চারটি সূরায় ৯ স্থানে উল্লেখ আছে। তাকে ছামুদ জাতির কাছে প্রেরণ করা হয়। সালেহ (আ.) এর মোজেজা ছিল একটি উটনি।

 

৬> ইবরাহিম (আ.) এর নাম ২৫ সূরায় ৬৯ বার উল্লেখ হয়েছে। তিনি ইরাকে জন্মগ্রহণ করেন ও ফিলিস্তিনে বসতি স্থাপন করেন। পরে আল্লাহ তায়ালার হুকুমে স্ত্রী ও শিশু সন্তান ইসমাঈলকে জনমানবহীন মক্কায় রেখে আসেন। ইবরাহিম (আ.) কে আবুল আম্বিয়া বা নবীদের পিতা বলা হয়। তিনি ছেলে ইসমাঈলকে সঙ্গে নিয়ে কাবা ঘর নির্মাণ করেন ও সর্বপ্রথম মানুষকে বায়তুল্লায় হজ করার জন্য আহ্বান করেন।

 

৭> লুত (আ.)। চৌদ্দটি সূরায় ২৭ বার উল্লেখ করা হয়েছে তার নাম। তার স্ত্রী কাফের ছিল। তার সম্প্রদায়ের লোকেরা সমকামিতার মতো পাপে লিপ্ত ছিল। ফলে আল্লাহ তায়ালা তাদের কঠোর শাস্তি প্রদান করেন।

 

৮> ইসমাঈল (আ.)। আট সূরার ১২ জায়গায় উল্লেখ হয়েছে এই নবীর নাম। জন্মের আগেই তাকে বিজ্ঞ বলে সুসংবাদ দেওয়া হয়েছিল।

 

৯> ইসহাক (আ.)। কোরআনের ১২টি সূরায় মোট ১৭ বার আলোচিত হয়েছে তার নাম। তিনি ও ইসমাঈলের (আ.) সম্পর্কে ভাই ছিলেন।

 

১০> ইয়াকুব (আ.)। ১০টি সূরায় ১৬ বার আলোচিত হয়েছে তার নাম। তার অন্য নাম হলোÑ ইসরাইল। তার নামানুসারে বনি ইসরাইল সম্প্রদায়ের নামকরণ করা হয়েছে।


 ১১> ইউসুফ (আ.)। তিনটি সূরায় ২৭ বার উল্লেখ হয়েছে তার নাম। এ ছাড়া সূরা ইউসুফ নামে ইউসুফ (আ.) এর ঘটনা সংবলিত একটি স্বতন্ত্র সূরা রয়েছে কোরআনে। তিনি নিজে নবী ছিলেন এবং তার পিতা ইয়াকুব (আ.), তার দাদা ইসহাক (আ.) ও পরদাদা ইবরাহিম (আ.) নবী ছিলেন।


 ১২> শোয়াইব (আ.)। চার সূরায় ১১ বার উল্লেখ করা হয়েছে তার নাম। তার সম্প্রদায়ের লোকেরা মাপে বা ওজনে কম দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে আজাবপ্রাপ্ত হয়েছিল।


 ১৩> আইয়ুব (আ.)। চারটি সূরার ৪ জায়গায় আলোচিত হয়েছে তার নাম। আল্লাহ তায়ালা তাকে দীর্ঘকাল কঠিন অসুখ দিয়ে পরীক্ষা করেছিলেন। কিন্তু তিনি ধৈর্যধারণ করে ওই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন।


 ১৪> জুলকিফল (আ.)। দুটি সুরায় দু-বার আলোচিত হয়েছে তার নাম।

 

১৫> মুসা (আ.)। পবিত্র কোরআনে সবচেয়ে বেশি তার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ৩৪টি সুরায় ১৩৭ বার আলোচিত হয়েছেন তিনি। বনি ইসরাইলের প্রথম নবী ছিলেন তিনি। মুসা (আ.) এর মোজেজা ছিল তিনি হাতের লাঠি মাটিতে রেখে দিলে তা বিশাল বড় সাপে পরিণত হতো। পরে সেটা হাতে নিলে আবার লাঠি হয়ে যেত।


 ১৬> হারুন (আ.)। ১৩টি সূরায় ২০ বার আলোচিত হয়েছেন তিনি। তিনি নবী মুসা (আ.) এর ভাই ছিলেন। বাগ্মীতায় পারদর্শী ছিলেন তিনি।

 

১৭> দাউদ (আ.)। ৯টি সূরায় ১৬ বার উল্লেখ হয়েছে তার নাম। তিনি নিজে রোজগার করে সংসার চালাতেন। তাকে জাবুর কিতাব প্রদান করা হয়েছিল। তিনি একদিন রোজা রাখতেন, আরেকদিন রাখতেন না।

 

১৮> সোলায়মান (আ.)। সাতটি সূরায় ১৭ বার উল্লেখ হয়েছে তার নাম। তিনি সারা পৃথিবীর বাদশাহ ছিলেন। পশু-পাখীদের ভাষা বোঝাসহ মোজেজাস্বরূপ বাতাস নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা পেয়েছিলেন তিনি।

 

১৯> ইলিয়াস (আ.)। দুটি সূরায় তিনবার উল্লেখ করা হয়েছে তার নাম।

 

২০> ইয়াসা (আ.)। কোরআনে কারিমের দুটি সুরায় দু-বার আলোচনা করা হয়েছে তার প্রসঙ্গ।

 

২১> ইউনুস (আ.)। দুটি সূরায় দু-বার উল্লেখ হয়েছে তার নাম। তাকে মাছে গিলে ফেলেছিল। পরে তিনি দোয়া করার পর আল্লাহ তায়ালা তাকে মুক্তি দিয়েছেন। তিনি নিনুওয়া এলাকার লোকদের কাছে প্রেরিত হয়েছিলেন। পূর্ববর্তী সব নবীর অধিকাংশ উম্মত তাদের সঙ্গে কুফরি করলেও ইউনুস (আ.) এর সম্প্রদায়ের সবাই তার প্রতি ঈমান এনেছিলেন।

 

২২> জাকারিয়া (আ.)। চারটি সূরায় সাতবার উল্লেখ হয়েছে এই নবীর নাম। পেশায় কাঠুরে ছিলেন তিনি। 

 

২৩> ইয়াহইয়া (আ.)। চারটি সূরায় পাঁচবার উল্লেখ হয়েছে তার প্রসঙ্গ। তাকে কিশোর অবস্থায়ই আল্লাহ জ্ঞানী করেছিলেন এবং তাকে তাওরাতের শিক্ষা দিয়েছিলেন।


২৪> ঈসা (আ.)। ১১টি সূরায় ২৫ বার উল্লেখ হয়েছে তার প্রসঙ্গ। তিনি বনি ইসরাইল সম্প্রদায়ের সর্বশেষ নবী। তার আরেক নাম মাসিহ।

 

২৫> মুহাম্মদ (সা.)। চারটি সূরায় মাত্র চার জায়গায় তার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যান্য স্থানে তার গুণবাচক নাম উল্লেখ করা হয়েছে। আইয়ুহান নবী কিংবা আইয়ুহার রাসুল বলেও সম্বোধন করা হয়েছে। এটা বিশ্বনবীর সম্মান ও মর্যাদার পরিচয় বহন করে।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url